সর্বশেষ খবর:
পাথরঘাটা মুরগি বিক্রি বন্ধ জামালপুরে ট্রেনে কাটা পরে গৃহবধূর মৃত্যু বলিউড অভিনেতা বরুণ ধাওয়ানের জন্মদিন আজ স্বপ্নের সোনালী ফসলে সেঁজেছে মাঠ, হাসি কৃষকের মুখে সুন্দরগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে বোরধানের ক্ষতি আধা মণ পেঁয়াজে একটি তরমুজ নড়াইলে বিএনপির দু’গ্রুপে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী কুখ্যাত ডাকাত শাহীন ও জুয়েল গ্রেফতার বাবার কোলে শিশু হত্যার মূল আসামি সহ গ্রেফতার ৫ রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ আজ আওয়ামী যন্ত্রে পরিণত হয়েছে : ডা.শাহাদাত হোসেন কোম্পানীগঞ্জ মুছাপুরে ভোগ দখলে আশ্রয় কেন্দ্র বাবা আ.লীগ নেতা, ছেলে ছাত্রদল সভাপতি প‌হেলা বৈশা‌খে ইলিশ‌কে ‘না’ ব‌লি ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিয়ে মহসিনা মায়ার ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নড়াইলে প্রাইম ব্যাংক জাতীয় স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ১০ লাখ মুসল্লি নিয়ে এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত দিনাজপুরে বাংলাদেশের সম্পদ মিলছে ভারতের সরকারি হাসপাতালে মনুষত্বের অবক্ষয় কবিতা: বছর শেষে বীরের কথা

তরুনীকে গন-ধর্ষন করে পতিতা সাজিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৫ এপ্রিল, ২০২২, ৩ বছর আগে, : 0

তরুনীকে গন-ধর্ষন করে পতিতা সাজিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে গণধর্ষনের পরপর ধর্ষিতা তরুনীকে পতিতা আখ্যায়িত করে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। এ ঘটনার দুদিন পর মামলা হলেও অভিযুক্তরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তরুনীকে মানসিকভাবে দূর্বল করতে প্রথমেই জোরপূর্ব্বক দেহ ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হয়।
ওই রাতেই ওই ভিডিও পোস্ট করা হয় এমএ মোমেন নামের এক ব্যাক্তির ফেসবুক আইডি থেকে। নির্যাতিত তরুনী রাগে-ক্ষোভে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে উদ্ধারকারী লোকজন তাকে থামিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। গণ ধর্ষনের ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার গভীর রাতে বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের তেলঘড়ি গ্রামে।
এলাকাবাসী ও মামলার বিবরণে জানা যায়,হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর গ্রামের দরিদ্র তরুনী বানিয়াচং উপজেলার তেলঘড়ি গ্রামের কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মালিকানাধীন পাশ্ববর্তী মার্কুলীবাজারের একটি বিউটি পার্লারে বেতনভূক্ত হিসেবে কাজ করতেন। ওই একই পার্লারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মেয়ে কেয়া বৈষ্ণবও কাজ করেন।
কাজ শেষে তরুনী পার্লার মালিক কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের বাড়িতে ফিরে এসে নিজের জন্য আলাদা পাক করে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে একই রুমে ঘুমান। ঘটনার রাতে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে ঘুমালে রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বাইরে বের হওয়া মাত্রই আগে থেকে ওতপেতে থাকা সংঘবদ্ধ দূর্বৃত্তের দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বসত বাড়ি থেকে দূরের নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে।
ধর্ষনের দায়ে অভিযুক্তরা  হলেন তেলঘড়ি গ্রামের অমৃত বৈষ্ণব, সচীন্দ্র বৈষ্ণব, নান্টু বৈষ্ণব,নেপাল বৈষ্ণব। পরবর্তীতে তেলঘড়ি প্রাইমারী স্কুলের বারান্দায় নিয়ে পুনরায় ধর্ষন করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং পতিতা হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে অভিযুক্তরা।
এদিকে কেয়া বৈষ্ণব ঘুম থেকে জেগে পাশে ওই তরুনীকে দেখতে না পেয়ে তার বাবা কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকে জানালে তারা অনেক্ষণ খোজাখোজি করে তরুনীর সন্ধান পেয়ে উদ্ধার করতে যান। এ সময় কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকেও দূর্বৃত্তরা বেধে ফেলে এবং নির্যাতিতা তরুনী ও তাকে মারপিট করে সাদা কাগজে দস্তখত নিয়ে ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণধন বৈষ্ণব ও তরুনী এক পর্যায়ে কৌশলে পালিয়ে আসলেও গণধর্ষনের শিকার তরুনী বেশি অসুস্থ হওয়ায় ও ধর্ষকদের ভয়ে তরুনীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এবং খবর পেয়ে বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জের সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটিকে দেখে আসেন ও ঘটনার বিবরন শুনে আসেন।
এব্যাপারে সার্কেল পলাশ রঞ্জন দে জানান,ঘটনটি শুনে হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটিকে দেখে এসেছি এবং এবিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাচ্ছি। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কিছুটা সুস্থ হয়ে নির্যাতিত তরুনী এক আত্মীয়র সহযোগিতায় ২১ এপ্রিল বানিয়াচং থানায় অভিযোগ দায়ের করতে এসে বানিয়াচং থানার কর্মরত ওইদিনের ডিউটি অফিসারের অসহযোগিতার কারনে ওইদিন থানা থেকে ফেরত যেতে হয়। বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি অবগত হয়ে ২২ এপ্রিল তরুনীকে খবর দিয়ে থানায় এনে অভিযোগ আমলে নেন।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণব জানান,মেয়েটি আমার পার্লারে কাজ করতো। বিভিন্ন সময়ে ওই বখাটেরা মেয়েটিকে ডিস্টার্ব করার বিরোধীতা করায় আমাকে ও মেয়েটিকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়েছিলো। আমি মেয়েটিকে উদ্ধার ও মামলার স্বাক্ষী হওয়ার কারনে আমি বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এছাড়া আমার পরিবারকে গ্রামের মধ্যে একঘরে করে রাখা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমারের নির্দেশে।
এ ব্যাপারে মেয়েটির এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধর্ষন হইল, নির্যাতিত হইল। এখন আবার উল্টা চরিত্র নিয়া দোষ দিচ্ছে। গরীব বলে কি এরা বিচার পাবেনা।
আসামীরা বিভিন্নভাবে ভয় দেখাচ্ছে সাক্ষীদেরকে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এমরান হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর / আকিকুর রহমান রুমন